Tuesday, February 28, 2017

জেনে নিন গ্রাম্য আদালত সর্ম্পকে বিস্তারিত

গ্রাম্য আদালতের গঠন :
দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায় কতিপয় ছোট খাটো বিরোধ বা বিবাদ খুবই দ্রুত নিষ্পতি করার উদ্দেশ্যে  ২০০৬ সালে ‘গ্রাম‌্য আদালত আইন’ পাশ করা হয় ।

গ্রাম্য আদালতের এখতিয়ার আধীন এলাকা:
গ্রাম্য আদালত আদেশ শুধু নিদিষ্ট ইউনিয়ানের এখতিয়ার ভুক্ত এলাকার জন‌্য প্রযোজ‌্য হবে ।

গ্রাম্য আদালতের সদস্য :
গ্রাম‌্য আদালত আইন, ২০০৬ এর ৫ ধারা অনুসারে গ্রাম্য আদালত গঠিত হবে । এক জন চেয়ারম্যান এবং উভয় পক্ষের মনোনীত ২ জন করে ৪ জন সদস্য নিয়ে গ্রাম্য আদালত গঠন করা হবে। তবে সদস্যদের মনোনীত ২ জন সদস্যের মধ্যে ১ জন অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হতে হবে ।

আদেশের বিরোদ্ধে রিভিশন:
যদি কোন ব্যক্তি গ্রাম্য আদালতের আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়, তাহলে নিধারিত সময়ের মধ‌্যে আদেশের বিরোদ্ধে এখতিয়ারবান সহকারি জজ আদালতে রিভিশন করতে পারবে । এক্ষেত্রে রিভিশন আবেদন করার ৩০ দিনের মধ‌্যে সহকারি জজ তা নিষ্পতি করবেন ।
গ্রাম্য আদালত অবমাননার শাস্তি:
কোন ব্যক্তি যদি গ্রাম্য আদালতের আদেশ অবমাননা করে, তাহলে অনধিক ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ।

আইনজীবি নিয়োগ:
গ্রাম্য আদালতে বিচার কার্য পরিচালনার জন্য কোন আইনজীবি নিয়োগ দেয়ার বিধান রাখা হয় নি।

লেখকঃ এনামুল হক
Department of Law
Dhaka International University, Bangladesh.

অ্যাডভোকেট পেশার উদ্ভব ও বিকাশ

অ্যাডভোকেট  আইন ব্যবসায়ী। একজন অ্যাডভোকেট যুগপৎ তার মক্কেলের প্রতিনিধি এবং আদালতের একজন কর্মকর্তা। মক্কেলের প্রতি একজন অ্যাডভোকেটের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি রয়েছে আদালতের প্রতিও। ঔপনিবেশিক শাসনামলে পদটির উদ্ভব হয়। প্রাক-ব্রিটিশ যুগে অ্যাডভোকেটের অনুরূপ পেশার লোক ছিলেন ‘ওয়াকিল’। এ ওয়াকিল মুগল দরবারে তার মক্কেলের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করতেন।  কিন্তু তিনি দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় কোনো সংগঠিত পেশার সদস্য ছিলেন না।

১৭৭৪ সালে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাডভোকেট ব্যবস্থা চালু হয়। ১৭৯৩ সালে এ ব্যবস্থা কর্নওয়ালিস কোড-এ অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৯৩ সালের প্রবিধান ৭-এর আওতায় সদর দীউয়ানি আদালতকে ওই আদালত অথবা তার অধীনস্থ আদালতে আইন ব্যবসায়ের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের উকিল হিসেবে সনদপত্র প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৮১৪ সালের প্রবিধান ২৭-এর মাধ্যমে জেলা আদালতগুলিকে ঐসব আদালতে আইন ব্যবসায়ের জন্য উকিলদের সনদপত্র প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৮৩৩ সালের প্রবিধান ১২-এর আওতায় সদর দীউয়ানি ও নিজামত আদালতে আইন ব্যবসার জন্য উকিলদের সনদপত্র প্রদানের বিধান রাখা হয়। ১৮৪৬ সালের লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যাক্টে  অ্যাডভোকেটদের যোগ্যতা ও কার্যাবলি নতুন করে সংজ্ঞায়িত হয়।
ওকালতির জন্য তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জনকারী ব্যক্তিদের সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা ১৮৫০ সালে প্রবর্তন করা হয়। এক্ষেত্রে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের উকিল হিসেবে নিয়োগের জন্য এ ধরনের তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় অংশ নিতে হতো না। ১৮৬৫ সালের লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যাক্টের বিধানমতে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের উকিল, মোক্তার বা রাজস্ব এজেন্ট হিসেবে আইন ব্যবসায়ের জন্য সনদপত্র প্রদান করা হতো। ১৮৭৬ সালের লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যাক্টের আওতায় হাইকোর্টকে উকিল, মোক্তার ও রাজস্ব এজেন্টদের সনদপত্র প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয়। উকিলরা সকল অধীনস্থ দীউয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং রাজস্ব দপ্তরগুলিতে আইন ব্যবসা করতে পারতেন; আর মোক্তাররা শুধু ফৌজদারি আদালতে এবং রাজস্ব এজেন্টরা কেবল রাজস্ব দপ্তরে আইন ব্যবসার যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন।

প্রথম অবস্থায় অ্যাডভোকেটরা মূল ও আপিল উভয় ক্ষেত্রেই হাইকোর্টে প্রাকটিস করতে পারতেন এবং উকিলরা কেবল আপিল বিষয়ে প্রাকটিস করতেন। ১৯২৬ সালের কাউন্সিল অ্যাক্টের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট এবং উকিলদের মধ্যকার এ পার্থক্যের অবসান ঘটে। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৫ সালের লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অ্যাক্টের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট ও অন্যান্য আইন ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিরাজমান পার্থক্যের নিরসন করে দু শ্রেণির অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির বিধান করা হয়। এর একটি শ্রেণি হাইকোর্ট এবং অন্যরা অধীনস্থ আদালতগুলিতে আইন ব্যবসার অধিকার লাভ করেন। এ আইনে উকিল, মোক্তার ও রাজস্ব এজেন্ট অভিধা বিলোপ করে এদের নিম্ন আদালতের অ্যাডভোকেট পদবি প্রদান করা হয়। নিম্ন আদালতের একজন অ্যাডভোকেট কয়েক বছর আইন ব্যবসার পর হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারতেন।

১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২-এর বিধান অনুসারে অ্যাডভোকেটগণ তালিকাভুক্ত হয়ে আসছেন এবং উক্ত বিধান দ্বারা তাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এ আদেশের অধীনে অ্যাডভোকেটদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে  বার কাউন্সিল গঠিত হয়। বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান থাকেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অথবা অধীনস্থ আদালতগুলিতে আইন ব্যবসার জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিল যোগ্য ব্যক্তিদের সনদ প্রদান করে থাকে। নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি লাভ অথবা ব্যারিস্টার হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি একজন অ্যাডভোকেটের দপ্তরে ছয় মাস শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করে বার কাউন্সিলের অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেন। যে অ্যাডভোকেটের অধীনে তিনি শিক্ষানবিশ থাকবেন তাকে কমপক্ষে সাত বছর আইন ব্যবসার অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় পাসের পর প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হয়। তাছাড়া বাংলাদেশের নিম্ন আদালতগুলিতে অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য বার কাউন্সিল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত লিগ্যাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত বার ভকেশনাল কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। যেকোনো নিম্ন আদালতে অ্যাডভোকেট হিসেবে দু বছর আইন ব্যবসার পর কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন, যদি অন্যান্য শর্ত পূরণ সাপেক্ষে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক ওই ধরনের আইন ব্যবসার শর্ত তার ক্ষেত্রে শিথিল করা না হয়ে থাকে। তালিকাভুক্তির জন্য এ ধরনের একজন প্রার্থীকে বার কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
হাইকোর্ট বিভাগের অ্যাডভোকেট হিসেবে পাঁচ বছর আইন ব্যবসার পর কোনো ব্যক্তি আপিল বিভাগের অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির নিকট আবেদন করতে পারেন। আপিল বিভাগে কয়েক বছর আইন ব্যবসায়ে অভিজ্ঞ একজন অ্যাডভোকেট আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারেন।

লেখক: কাজী এবাদুল হক
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের  সাবেক বিচারপতি।

Monday, February 20, 2017

সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নীতিমালা নিয়ে রুল

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৫:২ অনুপাত নীতিমালা অনুসরণ করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের শুনানি করে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ন কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

আইনজীবী হুমায়ন কবির বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বিধিমালায় বেসরকারি কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত সব প্রভাষক ৮ বছর পর সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা রয়েছে।

২০১০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্রের এক অংশে বলা হয় ‘এমপিওভুক্ত প্রভাষকগণ প্রভাষক পদে এমপিওভুক্তির ৮ (আট) বছর পূর্তিতে ৫:২ অনুপাতে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। এতে মোট পদ সংখ্যা বাড়বে না, অর্থাৎ ৫ জনে ২ জন করে সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। যা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

পরিপত্রের এই অংশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে রিট করেন বগুড়ার দরগাহাট ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বঞ্চিত মতিয়ার রহমানসহ ৭ জন প্রভাষক। সেই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত আজ রুল জারির নির্দেশনা দেন।

আইনজীবীরা প্রথম শ্রেণীর নাগরিক: আপিল বিভাগ

আইনজীবীরা প্রথম শ্রেণীর নাগরিক এবং অফিসার্স অব দ্য কোর্ট বলে জানিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চে রবিবার ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের আপিলের শুনানিকালে আদালত এ কথা বলেন।

রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে উদ্দেশ্য করে আপিল বিভাগ বলেন, আপনারা আইনজীবীরা তো বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক। আপনারা মন্ত্রী, এ্যাম্বাসেডর, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক, এ্যাটর্নি জেনারেল হতে পারেন।

আদালত বলেন, ড. মো. শহীদুল্লাহ ৫২টি ভাষা জানতেন এবং ১৭টি ভাষায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। কিন্তু তিনি তার নামের আগে বিজ্ঞ কথাটি লিখতে পারতেন না। আইনজীবীরা বিজ্ঞ শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের আপিলের অধিকতর শুনানিকালে আদালত এ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জেলা জজদের সচিবের সমপর্যায়ের মান দিলে আপনার সমস্যা কী? এ বিষয়ে আপনি আপত্তি করেন কেন? এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জেলা জজদের যুগ্ম-সচিবের সমপর্যায়ের মান দেওয়া হয়েছে।
আদালতের শুনানিতে রিটকারীদের আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ জেলা জজদের পদক্রম সচিবের সমপর্যায়ে নিয়ে আইন করার নির্দেশনা দিতে আর্জি জানান।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় পদক্রমের (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর জেলা জজদের পদমর্যাদা সচিবদের নিচে দেখানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সকে অবৈধ ঘোষণা করে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়ে ৮টি নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

সহকারী জজ হতে হলে আবেদনের যোগ্যতা

সহকারী জজ পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক অথবা দ্বিতীয় শ্রেণির এলএলএম ডিগ্রি উত্তীর্ণ হতে হবে। আইন বিষয়ে স্নাতক অথবা স্নাতক (সম্মান) অথবা এলএলএম ডিগ্রি পরীক্ষায় অবতীর্ণ প্রার্থীরাও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবেন। বয়স হতে হবে ১ মার্চ ২০১৬ তারিখে সর্বোচ্চ ৩২ বছর।প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক অথবা বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

আবেদন প্রক্রিয়া
এ পদে আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সোনালী ব্যাংকের শাখাগুলো থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে তা যথাযথভাবে পূরণ করে সচিব, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়, ১৫, কলেজ রোড, রমনা, ঢাকা ১০০০ ঠিকানায় নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সরাসরি বা ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছাতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তিন মাসের মধ্যে তোলা পাঁচ কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত রঙিন ছবি এবং পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০০ টাকা সচিব, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের অনুকূলে ১-২১০১-০০০২-২০৩১ নম্বর কোডে বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা এর দায়িত্ব পালনকারী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে মূল কপি সংযুক্ত করতে হবে।

নির্বাচন পদ্ধতি
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রার্থীদের প্রথমে ১০০ নম্বরের প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এই পরীক্ষায় সাধারণ বাংলা, সাধারণ ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়সমূহ, সাধারণ গণিত, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও আইন বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হবে।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের উপসচিব মো. আল মামুন জানান, আগে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে ৫৫ নম্বর লাগলেও এই নিয়োগে ন্যূনতম ৫০ নম্বর পেতে হবে। এবার নতুন নিয়মে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে, তাই পাস নম্বর কমানো হয়েছে বলে জানান আল মামুন। তিনি আরও বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এরপর ১০০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

এর মধ্যে বাংলা বিষয়ে ১০০ নম্বর, ইংরেজিতে ১০০, গণিতে ৫০, দৈনন্দিন বিজ্ঞানে ৫০, বাংলাদেশ বিষয়গুলোতে ৫০ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। আর বাকি ৬০০ নম্বরে আইন-সংক্রান্ত বিষয়ে পরীক্ষা হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে গড়ে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর থাকবে ৫০। এসব পরীক্ষার তারিখ বিভিন্ন পত্রিকা ও কমিশনের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে জানানো হবে।

পরীক্ষা প্রস্তুতি
সহকারী জজ পদে সপ্তম ব্যাচে নিয়োগ পান মো. আরিফুল ইসলাম। পরীক্ষা প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, লিখিত পরীক্ষায় আইন অংশে ভালো করতে হলে পড়তে হবে প্রার্থীর সম্মান শ্রেণির আইন-সম্পর্কিত বইগুলো। তিনি বলেন, বাংলা অংশের জন্য নবম থেকে দশম শ্রেণির ব্যাকরণের অধ্যায়গুলো পড়লে প্রশ্ন পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন লেখকের নাম, উক্তি, জন্ম-মৃত্যু সালগুলো জানা থাকলে বাংলা অংশে ভালো করা যাবে। আর গণিতে ভালো করতে হলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইগুলো বারবার চর্চা করলে প্রশ্ন পাওয়া যাবে। ইংরেজির জন্য গ্রামারগুলো পড়তে হবে মনোযোগসহকারে। এই গ্রামার অংশ থেকেই বেশি প্রশ্ন থাকে। বাংলাদেশ-আন্তর্জাতিক বিষয় ও দৈনন্দিনবিজ্ঞানের জন্য বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, জলবায়ু, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, বিভিন্ন জেলার আয়তন, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আর আন্তর্জাতিক অংশের জন্য বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, সাম্প্রতিক ঘটনা থেকে প্রশ্ন পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া বাজারে সাধারণ জ্ঞানের বিভিন্ন প্রকাশনীর বই ও দৈনিক পত্রিকাগুলো পড়লেও কাজে দেবে। আর বারবার চর্চা করতে হবে বিগত বছরের সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো।

মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আইন বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, ইতিহাস, প্রার্থীর নিজ জেলা বা উপজেলার আয়তন, সংস্কৃতি, রাজনীতি, জনসংখ্যা, সাংসদের নাম ইত্যাদি সম্পর্কে
ধারণা থাকলে মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করা যাবে বলে জানান আরিফুল ইসলাম।

সুযোগ-সুবিধা ও পদোন্নতি
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত একজন সহকারী জজ জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী ১৬০০০টাকা স্কেলে বেতন পাবেন। আল মামুন বলেন, জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে একজন সহকারী জজ পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হতে পারেন।

লিখিত পরীক্ষার তারিখ ও নিয়োগ-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ভিজিট করতে পারেন www.jscbd.org.bd এই ঠিকানায়।

Monday, February 13, 2017

জাল দলিল চিনবেন কিভাবে?

অনেক সময় দেখা যায়, মালিকের ছদ্মবেশে কাউকে মালিক সাজিয়ে জমি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে অসৎ কর্মচারীর যোগসাজশে দলিল জাল করে থাকে।

বণ্টননামার ক্ষেত্রে সহ-শরিকদের অজান্তে ভুয়া বণ্টননামা করে দলিল জাল করতে পারে। সাধারণত যেসব ক্ষেত্রে আদালত থেকে বণ্টননামা সম্পন্ন করা হয় না, সে ক্ষেত্রে দলিল জালের সম্ভাবনা থাকে। গ্রামের লেখাপড়া না জানা লোকদের বিভিন্ন প্রয়োজনে অনেক সময় স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়।

অনেক সময় ঘষামাজা করে এবং ওভাররাইটিং বা কাটাছেঁড়া করেও দলিল জাল করতে পারে। আবার মূল তারিখ ঠিক রেখে দলিলের বিষয়বস্তু জাল করতে পারে।

এজমালি সম্পত্তি অর্থাৎ ভাইবোন মিলে যে সম্পত্তি ভোগ করে থাকে, এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভাইয়েরা বোনদের না জানিয়ে দলিল তাদের নামেই করিয়ে থাকে। পরে জমি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বোনেরা দাবি করলে ক্রেতা বিপদে পড়তে পারে।

এখন জানুন কিভাবে জাল দলিল পরীক্ষা করবেন ঃ

(১) সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে লেখা হয়ে থাকে। কোন দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সাল মিলিয়ে দেখতে হবে। এ জন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে। এতে দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।

(২) এক জমির একাধিক মালিকের নামে করা থাকলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মূল মালিক কে, তা নির্ণয় করতে হবে।

(৩) অনেক সময় স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দলিলদাতা বা গ্রহীতার সাজা হয়। এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষর বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে স্বাক্ষরের সত্যতা যাচাই করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ভূমি অফিস থেকে বিভিন্ন সিল পরীক্ষা করেও জালিয়াতি নির্ণয় করা যায়। খেয়াল রাখতে হবে, অনেক আগের দলিলে আগের চিহ্নিত কিছু সিল ব্যবহারই থাকে। আগের দলিল কিন্তু সিল যদি নতুন হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, দলিলটি জাল হতে পারে। একই সঙ্গে তারিখটিও ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ কোনো সরকারি বন্ধের দিন থাকলে সন্দেহের অবকাশ থাকবে। অনেক সময় অর্পিত সম্পত্তি বা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি জীবিত দেখিয়ে জাল করা হয়।

(৪) সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। নামজারিতে ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, সেটা সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি দেখা যায়, সিএস জরিপের সঙ্গে বিক্রেতার খতিয়ানের কোনো গরমিল আছে, তাহলে বুঝতে হবে, কোনো জটিলতা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জরিপ খতিয়ানে জমির পরিমাণ পরবর্তী সময়ে যতবার বিক্রি হয়েছে, তার সঙ্গে জমির পরিমাণ মিল আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা। দাগ নম্বর, ঠিকানা এসব ঠিক আছে কি না, এসব যাচাই করতে হবে।

(৫) জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে ভায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ঠিক আছে কি না।

(৬) সম্প্রতি কোনো আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে তাতে উভয় পক্ষের ছবি ব্যবহার হয়েছে কি না যাচাই করতে হবে।

(৭) কোনো দান করা জমি হলে দলিলে সম্পাদনের তারিখ দেখে কবে জমিতে গ্রহীতা দখলে গেছে তা যাচাই করতে হবে। দলিলটি রেজিস্ট্রি করা কি না এবং দলিলদাতার সঙ্গে গ্রহীতার সম্পর্ক কী, তা যাচাই করতে হবে।
(৮) সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে নেওয়া দরকার।
(৯) দলিল সম্পাদনের সময় ব্যবহূত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কি না, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে নিন।

Sunday, February 12, 2017

বিচার বিভাগ ও বিচারপতি



১. ভারতীয় উপমহাদেশে প্রতিষ্ঠিত ১ম সুপ্রিম কোর্টের ১ম প্রধান বিচারপতি কে?
উ: স্যার এলিজা ইমপে।
২. ভারতীয় উপমহাদেশে প্রতিষ্ঠিত ১ম হাইকোর্টের ১ম প্রধান বিচারপতি কে?
উ: স্যার বার্নেস পিকক।
৩. ১৯৪৭ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ১ম হাইকোর্টের ১ম প্রধান বিচারপতি কে?
উ: এএসএম আকরাম।
৪. স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত ১ম সুপ্রিম কোর্টের ১ম প্রধান বিচারপতি কে?
উ: এএসএম সায়েম। 
৫. কলকাতা হাইকোর্টের ১ম বাঙালি বিচারপতি কে ছিলেন?
উ: শম্ভুনাথ পন্ডিত।
৬. কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম বাঙালি প্রধান বিচারপতি কে ছিলেন? 
উ: স্যার রমেশচন্দ্র মিত্র।
৭. কলকাতা হাইকোর্টের ১ম মুসলিম বিচারপতি কে ছিলেন?
উ: স্যার সৈয়দ আমীর আলী।
৮. বাংলাদেশে একই সঙ্গে কখনও কি ২ জন প্রধান বিচারপতি ছিলেন?
উ: হ্যা ছিলেন। ১৯৭৬ সালের সামরিক আইন ২য় ঘোষণা আদেশ (১৯৭৬ সালের ৪ নং আদেশ) বলে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টকে দ্বিখন্ডিত করা হয়। দুটি সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় স্বতন্ত্র স্থাপনা হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টকে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট এই ২ভাগে বিভক্ত করা হয়। তৎকালিন দায়িত্ব পালনরত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদ হোসেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিচারপতি রুহুম ইসলামকে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৭ সালের সামরিক আইন দ্বিতীয় ঘোষণা আদেশ(১০ম সংশোধনী) বলে (১৯৭৭ সালের ১নং ২য় ঘোষণা আদেশ) শীর্ষ পর্যায়ের আদালত দুটির একত্রীকরণ করা হ। একত্রীকরণ পর্যন্ত উপরোক্ত ২ জন প্রধান বিচারপতি স্ব - স্ব পদে বহাল ছিলেন। 
৯. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধন করা হয় কখন?
উ:১৮ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে। (১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ সংবিধান কার্যকর হওয়ার পূর্বে কোন সুপ্রিম কোর্ট ছিলনা তখন ছিল ক. বাংলাদেশ হাইকোর্ট; খ. বাংলাদেশ হাইকোর্টের আপীল বিভাগ)। 
১০. ভারতীয় উপমহাদেশে ১৮৩৪ সালে গঠিত ১ম আইন কমিশনের চেয়ারম্যান কে ছিলেন?
উ: থমাস ব্যাবিংটন ম্যাকলে।

How to Earn Money from BD Upload


Contact Form

Name

Email *

Message *